Tuesday, 22 December 2015

‘ওয়ার্ধা পরিকল্পনা’ কী ?

1. ‘ওয়ার্ধা পরিকল্পনা’ কী ?  
উত্তরঃ ‘ওয়ার্ধা পরিকল্পনা’ হচ্ছে প্রাক স্বাধীনতা যুগে গান্ধীজী প্রদত্ত স্বদেশভিত্তিক এক জাতীয় শিক্ষা পরিকল্পনা ।
১৯৩১ সালে গোল টেবিল বৈঠকে গান্ধীজী ব্রিটিশ সরকার প্রবর্তিত ইংরাজি ভাষা কেন্দ্রিক ভারতীয় শিক্ষানীতির কঠোর সমালোচনা করেন। এর ফলশ্রুতিতে ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের বলে ১৯৩৭ সালে ভারতের ৭টি প্রদেশে কংগ্রেসি মন্ত্রী সভা দেশ শাসনের অধিকার পেলে গান্ধীজী প্রাথমিক শিক্ষাকে সর্বজনীন ও অবৈঠনিক করার সুযোগ কাজে লাগালেন । তিনি তাঁর হরিজন পত্রিকায় ‘নঈ তালিম’ নতুন শিক্ষার পরিকল্পনাটি প্রকাশ করে নিজের শিক্ষা ভাবনা ও ভারতের প্রেক্ষিতে জনশিক্ষার প্রয়োজনীয়তার  কথাটি জানিয়ে দিলেন ।
অবশেষে ১৯৩৭ সালে ওয়ার্ধা সর্বভারতীয় শিক্ষা সম্মেলনে গান্ধীজীর এই শিক্ষা পরিকল্পনার রূপরেখা গ্রহণ করার ব্যবস্থা নেওয়া হল । ওয়ার্ধায় গান্ধীজীর শিক্ষা পরিকল্পনাটি গ্রহণ করা হয়েছিল বলে এই পরিকল্পনাকে বলা হয় ওয়ার্ধা পরিকল্পনা । এই পরিকল্পনার মুখ্য বিষয়গুলি হচ্ছে-
(১) জাতীয় স্তরে সামগ্রিক বাধ্যতামূলক অবৈঠনিক শিক্ষার ব্যবস্থা নিতে হবে ।
(২) মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষাদানের বিষয়টি গ্রহণ করতে হবে।
(৩)শিশু শিক্ষার্থীর শিক্ষা একটি উৎপাদনাত্মক শিল্পকে কেন্দ্র করে সংগঠিত করতে হবে।
(৪) এই শিক্ষা ব্যবস্থা থেকেই এই শিক্ষার ব্যয় নির্বাহের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
যা হোক, ওয়ার্ধায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ডঃ জাকির হোসেনের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে তার ওপর বুনিয়াদি শিক্ষার একটি পাঠ্যক্রম তৈরির দ্বায়িত্ব দেওয়া হয় এবং বিশদ আলোচনার পরে ঐ কমিটি একটি প্রতিবেদন পেশ করেন এবং ১৯৩৮ সালে হরিপূরা কংগ্রেসের অধিবেশনে গৃহীত হয় ওয়ার্ধা পরিকল্পনামাফিক জাকির হোসেনের কমিটির প্রস্তাবগুলি ।  
2. ‘Operation Blackboard’ কী ?
 উত্তরঃ একটি বিদ্যালয়কে সুচারুভাবে পরিচালনার জন্য, একটি পাকাবাড়ি, পানীয়জলের ব্যবস্থা, শৌচাগারের ব্যবস্থা, শ্রেণীকক্ষ পরিচালনার উপকরণসমূহ যেমন-ব্ল্যাকবোর্ড, চক, ডাস্টার, ম্যাপ, চার্ট এবং কমপক্ষে ২ জন শিক্ষক(এদের মধ্যে একজন মহিলা) নিয়োগের যে ব্যাপক পরিকল্পনা জাতীয় শিক্ষানীতি ১৯৮৬তে গ্রহণ করা হয়েছে তাকেই ‘Operation Blackboard’  বলা হয় ।  
3. ‘মুক্ত বিদ্যালয়’ কাকে বলে ?
উত্তরঃ পরিবর্তনশীল সমাজ ও প্রাকৃতিক পরিবেশ যেখানে প্রতি মুহূর্তে জ্ঞানের সম্প্রসারণ ঘটছে, সেখানে নির্দিষ্ট সময়ভিত্তিক শিক্ষা স্থায়ীভাবে মানুষের চাহিদা পরিতৃপ্ত করতে পারে না । আর এই ঘাটতি মেটানোর জন্য,প্রথামুক্ত শিক্ষার(Non-formal Education) ব্যবস্থা করা আবশ্যিক হয়ে পড়েছে ।এই প্রথামুক্ত শিক্ষাকে পরিচালনার জন্য বর্তমানে বিদ্যালয় স্তরে যে বিভিন্ন ধরণের শিক্ষালয় স্থাপিত হয়েছে  সেগুলিকেই বলা হয় ‘মুক্ত বিদ্যালয়’(যেমন,NIOS) অনুরূপভাবে উচ্চস্তরে এই প্রথামুক্ত শিক্ষাকে পরিচালনার জন্য বর্তমানে যে বিভিন্ন ধরণের শিক্ষালয় স্থাপিত হয়েছে সেগুলিকেই বলা হয় ‘মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়’ (যেমন IGNOU)। আবার অন্যভাবে বলা যায়, প্রথাগত বিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থায় কঠোর নিয়মনীতি বাদ দিয়ে বা অনেকাংশে শিথিল করে যে বিদ্যালয়ের মাধ্যমে বিকল্প শিক্ষা দেওয়া হয়  ‘মুক্ত বিদ্যালয়’ বলে।   

4. বিশ্বায়ন কাকে বলে ?

Answer: বিশ্বায়ন বলতে জাতীয় সীমানা অতিক্রম করে আর্থিক, রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ককে বিশ্বব্যাপী সম্প্রসারিত করার এক প্রক্রিয়াকে বুঝায় । 

2 comments: