আমাদের দেশ স্বাধীনতা লাভের পর
রাধাকৃষ্ণাণ,মুদালিয়ার ও কোঠারি কমিশন শিক্ষক-শিক্ষণ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য অনেক
গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করেছিলেন । কিন্তু বাস্তবে সেগুলি রূপায়িত হয়নি। বর্তমানে
শিক্ষক-শিক্ষণের যে ব্যবস্থা প্রচলিত আছে তাতে শিক্ষার্থীরা কেবলমাত্র ডিগ্রি লাভ
করে, কিন্তু শিক্ষক হিসাবে তাদের গুণগত মানের বিশেষ কোন উন্নতি ঘটে না ।
শিক্ষক-শিক্ষণকে যদি শিক্ষকের গুণগত মানের উন্নতির উপায় হিসাবে কাজে লাগাতে হয়
তাহলে এটিকে একটি নিরবচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। ১৯৮৬ সালের জাতীয়
শিক্ষানীতিতে শিক্ষক-শিক্ষণকে একটি নিরবচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া হিসাবে গ্রহণ করবার কথা
বলা হয়েছে এবং একথাও বলা হয়েছে যে নতুন শিক্ষানীতির সাফল্যে নিরবচ্ছিন্ন শিক্ষক
শিক্ষণের উপর অনেকখানি নির্ভর করবে। এই উদ্দেশ্যে জাতীয় শিক্ষানীতিতে District
Institute of Education and Training(DIET) স্থাপন করে প্রাথমিক,
নন-ফরম্যাল ও বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে বলা
হয়েছে। প্রচলিত প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্য থেকে বাছাই করে এই
জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলি তৈরি করতে হবে। এই জাতীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষক যতদিন
চাকরিরত থাকবেন ততদিন তাঁকে রিফ্রেসার কোর্স,শর্ট কোর্স ট্রেনিং,সেমিনার,
সিম্পোজিয়াম প্রভৃতিতে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে তাঁর পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি করবার
অবিরাম প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
কেন্দ্রীয়
সরকার ১৯৮৭ সালে শিক্ষক-শিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলির পুনর্গঠনের জন্য সারা দেশে একটি
কেন্দ্রীয় প্রকল্প চালু করেন। এই প্রকল্প অনুয়ায়ী এদেশে বেশ কতগুলি প্রাথমিক
শিক্ষক-শিক্ষণ প্রতিষ্ঠানকে পুনর্গঠিত ও উন্নীত করা হয়েছিল এবং এগুলির নাম দেওয়া
হয়েছিল ডায়েট(DIET)। অষ্টম ও নবম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাকালে প্রত্যেক রাজ্যে
এইরুপ প্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য শতকরা ১০০ ভাগ কেন্দ্রীয় অর্থ সাহায্য দেওয়া হয়। এছাড়াও
এই প্রতিষ্ঠানগুলির পরিকাঠামোগত উন্নয়ন এবং চাকরিরত শিক্ষকদের নিরবচ্ছিন্ন
প্রশিক্ষণের জন্য বার্ষিক কেন্দ্রীয় অনুদানের ব্যবস্থা আছে।
No comments:
Post a Comment