ভারত একটি সার্বভৌম
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র । এর রাষ্ট্রের সংবিধান ১৯৫০ সালে ২৬ শে জানুয়ারি থেকে
কার্যকরী হয় । নিম্নে সংবিধানের শিক্ষাসংক্রান্ত ধারা ও উপধারাগুলি আলোচনা করা হল-
(১) ১৪ নং ধারাঃ ভারতের
সংবিধানে ১৪ নং ধারায় বলা হয়েছে, রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত সকল নাগরিক আইনের চোখে
সমান। অর্থাৎ আইনের দ্বারা সকলকেই সমানভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে।
(২)১৫ নং ধারাঃ এই ধারা
অনুযায়ী বলা হয়েছে যে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে রাষ্ট্র প্রত্যেক নাগরিকের
ক্ষেত্রে সমান আচরণ করবে। অর্থাৎ কারোর ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হবে না ।
(৩)২৮ নং ধারাঃ এই ধারা
অনুযায়ী শিক্ষার ক্ষেত্রে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হয়েছে । সরকারী শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানে কোনভাবেই ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া যাবে না । কিন্ত বেসরকারি শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানে এই শিক্ষা দেওয়া যেতে পারে, তবে এক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীরা সবসময় এই
শিক্ষা গ্রহণ করতে বাধ্য থাকবে না ।
(৪)২৯ নং ধারাঃ ভারতে অন্তর্ভুক্ত সকল নাগরিক
নিজেদের ভাষা, সংস্কৃতি ইত্যাদি সংরক্ষিত করতে পারবে। ধর্ম, জাতি,বর্ণ, ভাষা
ইত্যাদি নির্বিশেষে সকল নাগরিক রাষ্ট্র দ্বারা পরিচালিত কোনো প্রতিষ্ঠানে অংশগ্রহণ
করতে পারবে।
(৫)৩১ নং ধারাঃ এই ধারা
অনুযায়ী ধর্ম বা ভাষাভিত্তিক সমস্ত সংখ্যালঘু মানুষ নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী শিক্ষা
প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে পারবে।
(৬)৪১ নং ধারাঃ এই ধারা
অনুযায়ী রাষ্ট্রের অন্তর্গত সমস্ত যুবক, বৃদ্ধ, অসুস্থ এবং অক্ষম মানুষদের
সরকারীভাবে সাহায্য দান করা হবে এবং সকল নাগরিকদের জন্য রাষ্ট্র শিক্ষা ও জীবিকার
বন্দোবস্ত করবে ।
(৭)৪৫ নং ধারাঃ এই ধারায়
সংবিধান কার্যকরী হওয়ার দশ বছরের মধ্যে দেশের সমস্ত ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত
ছেলেমেয়েদের অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলকভাবে শিক্ষা দানের কথা বলা হয়েছে ।
(৮)৪৬ নং ধারাঃ এই ধারায়
সমাজের তপশিলি জাতি ও জনজাতিদের শিক্ষার কথা বলা হয়েছে।অর্থাৎ রাষ্ট্র তাদের
শিক্ষাগত ও আর্থিক উন্নতিতে যথাযথ সাহায্য করবে ।
(৯)৩৩৭ নং ধারাঃ এই ধারায়
ইং-ভারতীয়দের শিক্ষাসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার কথা বলা হয়েছে । ১৯৪৮ সালের ৩রা
মার্চ এই সম্প্রদায়ের জন্য যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হয় তা সংবিধান প্রণয়নের পর
তিনটি আর্থিক বছরের মধ্যে এই সকল সম্প্রদায়ের জন্য ব্যয় করা হয় ।
(১০)৩৪৩ নং ধারাঃ এই ধারায়
জাতীয় ও সরকারী ভাষার কথা বলা হয়েছে । সরকারী ভাষা হবে দেবনাগরি হরফে লিখিত হিন্দি
ভাষা । এছাড়া এও বলা হয়েছে যে, ইংরেজি ভাষা সরকারী কাজে সংবিধান প্রণয়নের ১৫ বছর
পর্যন্ত ব্যবহৃত হবে ।
(১১)৩৪৫ নং ধারাঃ এই ধারা
অনুযায়ী বলা হয়েছে যে হিন্দি বা অন্য যে কোনো ভাষাকে যে কোনো রাজ্য আইন প্রণয়নের
মাধ্যমে সরকারী ভাষা হিসাবে ব্যবহার করতে পারবে ।
(১২)৩৪৭ নং ধারাঃ এই ধারা
অনুযায়ী বলা হয়েছে যে, কোনো রাজ্যের মানুষ যদি নিজেদের ভাষাকে সরকারি কাজে
ব্যবহারের জন্য রাষ্ট্রপতিকে জানায় তাহলে রাষ্ট্রপতি রাজ্য সরকারের কাছে সেই
ভাষাটিকে সরকারি ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য অনুমোদন করতে পারে।
(১৩)৩৫০ নং ধারাঃ ৩৫০ ‘ক’
ধারায় বলা হয়েছে যে, প্রত্যেক মানুষ প্রাথমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষা লাভের ক্ষেত্রে তাদের
নিজেদের মাতৃভাষা ব্যবহারের সুযোগ পাবে । ৩৫০ ‘খ’ ধারায় বলা হয়েছে যে, রাষ্ট্রপতি
ভাষাগত দিক থেকে সংখ্যালঘুদের জন্য একজন অধিকারী নিয়োগ করতে পারবে ।
(১৪)৩৫১ নং ধারাঃ এই
ধারায় বলা হয়েছে যে,রাষ্ট্রে হিন্দি ভাষার উন্নতি এমনভাবেই করতে হবে যাতে এই ভাষা
দ্বারা সমগ্র দেশের বিভিন্ন সংস্কৃতি প্রকাশ পায় ।
No comments:
Post a Comment